ধুনটে শিশু রজনী হত্যার রহস্য উন্মোচন
সুমন হোসেন,ধুনট প্রতিনিধি: বগুড়ার ধুনটে আল মায়দা আক্তার রজনী নামের ৮ বছর বয়সী এক শিশুর বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ৫ মে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের উত্তর পাশে ও এলাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশের একটি পরিত্যক্ত স্থান থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করে। নিহত মায়দা আক্তার রজনী এলাঙ্গী গ্রামের পশ্চিম পাড়া এলাকার অটো ভ্যানচালক গাজীউর রহমানের মেয়ে ও এলাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। এ ঘটনায় রজনীর বাবা বাদি হয়ে ধুনট থানায় এজাহার দায়ের করেছে।
এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মায়দা আক্তার রজনী গত ৪ মে বৃহস্পতিবার বিকাল অনুমান ৫ টার দিকে এলাঙ্গী বাজার থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হারানো বিজ্ঞপ্তিসহ তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। এর একপর্যায়ে শুক্রবার সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৬ টার দিকে এলাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের উত্তর ও এলাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশের দেওয়ালের সঙ্গে লাগানো পরিত্যক্ত স্থানে বিভিন্ন লতাপাতা দিয়ে ঢেকে রাখা ও অনেকটাই বিবস্ত্র অবস্থায় রজনীকে খুঁজে পায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
পরে মায়দা আক্তার রজনী হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন করতে মাঠে নামে পুলিশের চৌকস দল। অবশেষে ৬ মে শনিবার বিকেলে রহস্য উন্মোচনে ব্রিফিং করে বগুড়া জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) স্নিগ্ধ আখতার পিপিএম। ব্রিফি এ বলা হয়, ঘটনার দিন বিকেলে আম কুড়াতে যায় শিশু মায়দা আক্তার রজনী। পরে বাড়িতে ফিরে না আসায় থানায় সাধারন ডায়রি করে এবং খুঁজতে থাকে তার পরিবারের লোকজন। ৫ মে শুক্রবার সন্ধ্যায় পরিত্যাক্ত স্থানে মায়দার মৃতদেহ খুঁজে পায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। পরে রজনীর বাবা অজ্ঞাত নামীয় ধুনট থানায় একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে ঘটনার সাথে জড়িত ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের কথা শিকার করে তথ্য দেয় ওই কিশোর। কিশোরের দেয়া তথ্যমতে পুলিশ জানায়, জৈবিক তারনা মেটাতে হত্যাকান্ডেরর ১০ দিন আগে পরিকল্পনা করছিলো গ্রেফতারকৃত কিশোর ও তার সমবয়সী ২ বন্ধু। ঘটনার দিন কৌশলে রজনীকে ফুসলিয়ে নিয়ে গিয়ে প্রথমে ৩ বন্ধু মিলে ধর্ষণ করে। তাদেরকে চিনতে পারে বলে মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধে রজনীকে হত্যা করে রাজ্জাক নামের এক ব্যাক্তির পরিত্যাক্ত ঝোপের মধ্যে মৃতদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ হেফাজত থেকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলেও ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ রবিউল ইসলাম বলেন, নিহত শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত ও ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য শনিবার সকালে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এঘটনার সাথে জড়িত ১ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
কোন মন্তব্য নেই